ছোটোদের চাঁদের হাসি / ছড়া - কবিতা / ফেব্রুয়ারি ২০২৪

ছড়া-কবিতা

  • শ্রদ্ধাঞ্জলি

 

হাসিখুশি কিচ্ছু

ছেলেমেয়ে বিচ্ছু

ভবানীপ্রসাদ মজুমদার

 

এক

 

কানটা ধ'রে বেজায় জোরে

মা বললেন, খোকা,

কোমরে তুই গামছা বেঁধে

করিস কী রোজ বোকা?

আচমকা কান-মলা খেয়েই

বলল খোকা কেঁদে

দু'দিন বাদেই পরীক্ষা তাই

পড়ছি কোমর বেঁধে!

 

 দুই

 

স্বর্গেতে যায় ভালো ভালো লোক,

নরকেতে যায় পাজি,

এবার বলো তো, স্বর্গে যেতে

আছ কে কে ঠিক রাজি?

 

স্যারের কথায় সব তোলে হাত

কেঁদে বলে একা হীরে,

বাবা বলেছেন, যাবে না কোথাও

সোজা এস ঘরে ফিরে!

 

 

মাতৃভাষা

কাজী মুরশিদুল আরেফিন

 

এখান থেকে পাশের দেশে

পথটা গেছে বেঁকে,

মামার বাড়ি পড়বে বাঁয়ে

হাটচালাটা রেখে।

 

একটু হেঁটে গেলেই আরও

দেখতে পাবে নদী,

সেই নদীতে ইলিশ পাবে

জালটা ফেলো যদি।

 

যাচ্ছো যখন মৌতলাতে

আমার মামার বাড়ি,

মায়ের জন্য আনতে পারো

বর্ণলিপির শাড়ি।

 

গরুর গাড়ি চলত আগে

কুশলিয়াতে গেলে,

মাটির হাঁড়ির ঝালের নাড়ু

আনতে পারো পেলে।

 

মায়ের ভাষা অ আ ক খ

সবার মুখে মুখে,

সবুজ পাখি এপার থেকে

যাচ্ছে উড়ে সুখে।

 

গাইছে পাখি রবিঠাকুর

নজরুলেরও সুরে,

আমার মামার বাড়ি যেয়ো

নয় তো বেশি দূরে।

 

 

ইচ্ছেপুরের চাবি

সুখেন্দু মজুমদার

 

ইচ্ছেপুরের কথা যখন আমার মনে আসে

ঘুমপাড়ানি মাসি পিসি অমনি বসে পাশে।

হরেক রকম গল্প শোনায় খুশিতে ভরপুর

ঢেউ বলল, বাঁক পেরোলেই পাবে ইচ্ছেপুর।

 

এই চেপেছি ঢেউ এ আবার এই এসেছি নেমে

শোনার পরে তোমরা শুধু উঠবে জানি ঘেমে।

আমি নাহয় একলা একা কিসের শুনি মানা

ডুবসাঁতারে পেরিয়ে যাব স্বপ্নসায়রখানা।

 

এক ডুবেতে মাঝ বরাবর যেই দিয়েছি দুই

পৌঁছে গেলাম পাড়ের কাছে এবার কাকে ছুঁই!

ফেরার কথা ভাবছি না আর কখন গেছি ভুলে

খুঁজছি যা যা সবই আছে দেখি দু'চোখ খুলে।

 

আমার খুশি টগবগানো নদীর জোয়ার ভাটা

আসতে যেতে খুঁজলে পাবে, একটু সাদামাটা।

সেই খুশিটা একরোখা খুব নয়ত হাবিজাবি

খোঁজ জানে সে কোথায় পাবে ইচ্ছেপুরের চাবি।

 

 

সোনার চোখে জল

প্রদীপ আচার্য

 

মিষ্টি সোনার চোখে জল ঝরছে কেন বল?

বল কেন এই সোনামণির চোখ দুটো ছলছল?

বাঁধভাঙা ওই নদীর মতো নামল চোখে ঢল!

 

ডুকরে ডুকরে কাঁদছে সোনা দু'চোখ ঢেকে হাতে

মা বললেন, কাঁদুক মেয়ে কী এসে যায় তাতে?

কান্না শুনে ফুল-পাখিদের মন হল চঞ্চল।

 

জানলা দিয়ে ডাকল চড়ুই টুটুই টুটুই টুই

টবের গোলাপ বলল ডেকে কেমন বোকা তুই!

শুনেই সোনা উঠল হেসে খুশিতে ঝলমল।

 

 

পরিচয়

সুবীর ঘোষ

 

একটা আরব একটা চিনে

       একটা ওলন্দাজ

একটা ছোঁড়ে ধনুক তির

       দু'জন গোলন্দাজ।

 

একটা কুমোর একটা কুমির

       একটা রাজকুমার

কুমার পড়ে গল্পের বই

       আলেকজাণ্ডার দুমার।

 

 

একটি ছোট্ট ছড়া

অতনু বসু

 

চাঁদ নাকি তোকে দেখে হেসেছিল কাল

রাত জেগে জেগে রোজ যতো ভুলভাল

স্বপ্ন দেখিস, আর রেখে দিস টুকে

তাই বলি এসব কে দিল ফেসবুকে?

অথচ একটা দিন বিশ্বাস কর

বিছানায় শুয়ে আছি গায়ে বেশ জ্বর,

ডাকে এলো প্যাকেটেতে মোড়া এক বই-

ভেতরে কবিতা, ছড়া, গল্পের খই

ফুটিয়েছে লেখকেরা, ছবি আঁকাজোকা

পড়তে পড়তে হেসে ওঠে ছোটোখোকা 

'চাঁদের হাসি’টা আমি দ্রুত নিই কেড়ে

কিছুটা পরেই দেখি জ্বর গেছে সেরে।

 

 

ইঁদুরের বুদ্ধি

প্রলয়কুমার চট্টোপাধ্যায়

 

ভীষণভাবে ভয় পেয়েছে, ইঁদুরগুলি আজ

সবাই জানে এটা হলো বাঘের মাসির কাজ।।

প্রতিটাদিন একটা করে পড়ছে ইদুর মারা,

কি করা যায় এ ব্যাপারে মিটিং ডাকে তারা।।

নেংটি ইদুর বলে, শোনো বুদ্ধি খাটাই তবে,

ঘন্টা কিনে বাঘের মাসির গলায় বাঁধতে হবে।।

যেইনা মাসি আসবে তেড়ে আমাদেরই দিকে,

ঘন্টা শুনে পড়বে সরে সবাই তার-ই ফাঁকে।।

ধেড়ে ইদুর এসব কথা শুনছিলো মন দিয়ে,

বলল হেসে নেংটিকে সে নিজের কাছে নিয়ে

মতলবটা খাসা তোমার সন্দেহ নেই তায় ,

কিন্তু ভায়া বাঁধবে কে তা বাঘের মাসির গলায় ??

 

 

 

 

 

 

 

 


পাঠকদের মন্তব্য

সঞ্জিতকুমার সাহা লিখেছেন... ১২ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
ছড়াগুলো সবই ভালো লাগলো। ভালো লাগলো শ্রদ্ধাঞ্জলি -- ভবানীপ্রসাদের লেখাও। নির্বাচন খুব ভালো।
তনুজা চক্রবর্তী। লিখেছেন... ১৪ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
সবকটি ছড়া কবিতাই সুন্দর ভাবনা থেকে সৃষ্টি করা হয়েছে। বেশ ভালোলাগল।
শচীন্দ্র নাথ গাইন লিখেছেন... ২৭শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৪
সবগুলোই চমৎকার মনকাড়া ছড়া।

আপনি কি এই লেখায় আপনার মন্তব্য দিতে চান? তাহলে নিচে প্রদেয় ফর্মটিতে আপনার নাম, ই-মেইল ও আপনার মন্তব্য লিখে আমাদের পাঠিয়ে দিন।
নাম
ই-মেইল
মন্তব্য

250

    keyboard_arrow_up